কলকাতায় বেশকিছু ব্লগারকে খুনের পরিকল্পনা আল-কায়েদা-র! জঙ্গি গ্রেফতারে চাঞ্চল্যকর তথ্য..

কলকাতায় বেশকিছু ব্লগারকে খুন-এর ষড়যন্ত্র করেছে আল-কায়েদা। দিন কয়েক ধরে এসটিএফ-এর জালে ধরা পড়া তিন আল-কায়েদা জঙ্গিকে গ্রেফতার করে এমনই তথ্য সামনে এল। কলকাতা পুলিশের এসটিএফ সূত্রে খবর, কলকাতার বুকে ১০ জন মুক্তমনা ব্লগারকে খুনের পরিকল্পনা এঁটেছিল আল-কায়েদার ছায়া সংগঠন আনসারুল্লা। এই ব্লগারদের নাম-পরিচয় এখনও সামনে আনা হয়নি। তবে, জেরায় ধৃত জঙ্গিরা জানিয়েছে, কলকাতা শহরের এই ১০ ব্লগারকে খুন করা ছাড়াও তারা আরও ৭৫ জন ব্লগারকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল। এই ৭৫ জন ব্লগার-ই বাংলাদেশের। শুক্রবার ভোররাতে শিয়ালদহের জগত সিনেমার কাছে একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার হওয়া আল-কায়েদা জঙ্গি শাহাদাত হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এসটিএফ। তার কাছ থেকে মেলে ব্লগার-দের তালিকা। আর তাতেই মেলে কলকাতার ১০ ব্লগারের নাম।

শাহাদাত-কে জেরা করে এসটিএফ আরও জেনেছে যে সম্প্রতি হাওড়াতে তার সাহায্য়েই ঘাঁটি গেড়েছিল আরও দুই আনসারুল্লা জঙ্গি। স্বপন বিশ্বাস এবং নয়ন গাজি নামে এই দুই জঙ্গি। বাংলাদেশে একাধিক ব্লগার খুনে এই দুজনেই অভিযুক্ত। শাহাদাতের সাহায্যেই স্বপন ও নয়ন গাজি সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতায় এসেছিল। হাওড়ার ডবসন রোডের শিবা লজে এই দু'জনকে রাখা হয়েছিল। শিবা লজের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে স্বপন বিশ্বাস ও নয়ন গাজিকে চিহ্নিত করা হয়। সেখানকার কর্মীরা জানিয়েছেন স্বপন ১ অক্টোবর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ছিল। পরিচয়পত্র হিসাবে স্বপন আধার কার্ডও দিয়েছিল। আধার কার্ডে উত্তর ২৪ পরগনার বাজিতপুরের ঠিকানা লেখা ছিল। বর্তমানে স্বপন ও নয়ন কলকাতা বা সংলগ্ন এলাকায় গা ঢাকা দিয়েছে বলে এসটিএফ জানতে পেরেছে। স্বপন ও নয়ন গাজির ছবিও এদিন প্রকাশ করেছে এসটিএফ। এই দুই ব্যক্তি সম্পর্কে কোনও তথ্য দিতে পারলে আর্থিক পুরস্কারও দেওয়া হবে জানিয়েছে তারা। শাহাদাত এদেশে বেশকিছু লিঙ্কম্যানও তৈরি করেছে। কলকাতা শহরেই রয়েছে তার একাধিক লিঙ্কম্যান। এসটিএফ এখন এই লিঙ্কম্যানদেরও জালে ফেলতে চাইছে। শাহাদাত আরও জানিয়েছে যে, বাংলা ছাড়াও হিন্দু, তেলেগু-তেও ওয়েব সাইট খুলে মুসলিম তরুণদের সন্ত্রাসের দীক্ষা দিচ্ছে আল-কায়েদা। আলা-বালা নামেও একটি জেহাদ ওয়েবসাইটেরও খোঁজ মিলেছে। কলকাতায় আনসারুল্লা-র কাজ কর্ম বৃদ্ধির পিছনে আরও এক জঙ্গির নাম পাওয়া গিয়েছে। জিয়াউল হক নামে এই জঙ্গি বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রাক্তন কর্মী। ২০১২ সালে বাংলাদেশে সেনা অভ্যুত্থানে সে জড়িত ছিল।

 কিন্তু, এই বিদ্রোহ সেভাবে জোরদার না হওয়ায় সেনা বাহিনী ছেড়ে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেয়। বর্তমানে এই জিয়াউল আনসারুল্লার শীর্ষ জঙ্গি নেতা এবং সেই শাহাদাত, তনবীর, রিয়াজুলদের নিয়ন্ত্রণ করে। এসটিএফ সূত্রে খবর, তনবীর, রিয়াজুলরা যে দেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং রাসায়নিক সংগ্রহের চেষ্টা করছিল তা আসলে হিট লিস্টে থাকা কলকাতা শহরের ব্লগারদের খুনের জন্য। জেরায় যে সব তথ্য সামনে এসেছে তা সাজিয়ে এমনই সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাচ্ছে এসটিএফ।বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে মুক্তমনা ব্লগারদের খুনে বারবার আনসারুল্লার নাম জড়িয়েছিল। কিন্তু, সীমান্ত পেরিয়ে হঠাৎ করে এদেশে ঢুকে ব্লগার হত্যার ষড়যন্ত্র কেন কষেছিল আল-কায়েদার ছায়া সংগঠন আনসারুল্লা? গোয়েন্দা সূত্রে যা খবর তাতে প্রাথমিকভাবে এই ব্লগার খুনের মাধ্যমে আল-কায়দা ভারতের বুকে তাদের উপস্থিতি জানান দিতে চাইছে। এরপর আরও বড় অপারেশনের পরিকল্পনা করে রেখেছে তারা। কিন্তু, কি ধরনের সেই অপারেশন তার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি

Comments

Popular posts from this blog

যদি আমি ভারতে থাকতাম, তাহলে নোবেল পুরস্কার পেতাম না! বললেন নোবেল বিজয়ী অভিজিৎ ব্যানার্জী

links 19

webs 20